Monday, May 16, 2016

বিরাট-ডি’ভিলিয়ার্সকে থামানোই আজ বড় চ্যালেঞ্জ নাইটদের

পাঁচশোর টিকিট হাসতে হাসতে সাত-আটশোতে বিকোচ্ছে কালোবাজারে। আশা করা যায়, আইপিএল নাইনে ইডেন প্রথমবার হাউসফুল হতে যাচ্ছে।
লড়াইটা হবে মূলত বেঙ্গালুরুর ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কলকাতার বোলিংয়ের। আরও স্পষ্ট করে বললে, ভিকে-এবি জুটির সঙ্গে কেকেআর বোলারদের। আসলে বেঙ্গালুরুর শক্তিশালী ব্যাটিংকে দ্রুত বশ মানাতে স্পিনারদের উপরই ভরসা রাখছে কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে সেটা কতটা কার্যকরী হবে বলা কঠিন। কারণ, বিশ্ব ক্রিকেটে কোহলি এখন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। প্রত্যেক ম্যাচেই তিনি নতুন করে নিজেকে মেলে ধরছেন। নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। একদিকে নেতৃত্বের প্রবল চাপ, অন্যদিকে বিপুল প্রত্যাশা-- কোনও কিছুই টলাতে পারছে না বিরাটকে। আইপিএল নাইনে ইতিমধ্যেই তিনটি সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন তিনি। গত ম্যাচে গুজরাতের বিরুদ্ধে মাত্র ৫৫ বলে ১০৯ রান করেছিলেন আরসিবি অধিনায়ক। ডি’ভিলিয়ার্সের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৯৬ বলে ২২৯ রানের রেকর্ড পাটর্নারশিপ গড়ে তুলেছিলেন বিরাট। ১১ ম্যাচে কোহলির সংগ্রহ এখনও অবধি ৬৭৭ রান। গড় ৭৫.২২। পিছিয়ে নেই ডি’ভিলিয়ালর্সও। ৫৩৮ রান করে ফেলেছেন তিনিও। স্ট্রাইক রেট ১৭১.৮৮। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, নাইট রাইডার্স বোলারদের কাছে বড় বাধা এই দুই ব্যাটসম্যান। আসলে ক্রিস গেইল ফর্মে না থাকা সত্ত্বেও বেঙ্গালুরু ম্যাচের পর ম্যাচ যে ভাবে বড় বড় স্কোর খাড়া করেছে তা দেখে অনেকেই বিস্মিত। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের কথায়, বিরাট কোহলিকে প্লে-অফে খেলতে দেখা না গেলে সেটাই হবে আইপিএল নাইনের সব থেকে বড় অঘটন।
কোহলি কিংবা ডি’ভিলিয়ার্স ফ্লপ করলে ব্যাক-আপ হিসাবে থাকছেন লোকেশ রাহুল, শচীন বেবি। তবে ভিকে-এবি জুটি থাকলে ম্যাচে যে ইমপ্যাক্ট পড়বে সেটা অন্যদের থেকে আশা করা উচিত নয়। গম্ভীর বাহিনী যত তাড়াতাড়ি ভিকে-এবি জুটিকে ডাগআউটে ফেরাতে পারবে, সেটা তাদের পক্ষে ভালো। না হলে আরও এক প্রলয়ের মুখে পড়তে হবে কেকেআরকে। গেইল যেন ঘুমন্ত দৈত্য। হঠাৎ করে কবে জেগে উঠবেন সেটা আন্দাজ করা কঠিন। কে জানে গেইলের ফিরে আসার মঞ্চটা ইডেন?
পুনে-কলকাতা ম্যাচ যে পিচে হয়েছিল, সেই পিচেই হবে কলকাতা-বেঙ্গালুরু ম্যাচ। তাই স্পিনারদের হাতেই যে ম্যাচের রাশ থাকবে সেটা আশা করা যায়। স্লো টার্নারে নারিনের থেকেও চাওলা অনেক বেশি বিপজ্জনক। সাকিব-আল-হাসানের বোলিংও বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলতে পারে। অতিরিক্ত স্পিনার হিসাবে কাজ চালাবেন ইউসুফ পাঠান। তিন পেসার সম্ভবত মর্নি মর্কেল, আন্দ্রে রাসেল ও অঙ্কিত রাজপুত।
রান তাড়া করতে পছন্দ করেন কেকেআর ক্যাপ্টেন গম্ভীর। ব্যাটিংয়ের বিচারে বেঙ্গালুরুর বোলিং কিছু নয়। বহু ম্যাচে তার খেসারতও গুণতে হয়েছে বিরাটকে। কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চয়ই বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। রাজকোট কিংবা বেঙ্গালুরুর উইকেটে যতটা রান হয়েছে, সেটা ইডেনে এই গরমে আশা করা ঠিক নয়। তবুও কিউরেটর আশ্বস্ত করছেন স্কোর খুব খারাপ হবে না। তর্কের খাতিয়ে যদি ধরে নেওয়া যায় বেঙ্গালুরু প্রথমে ব্যাট করে দু’শোর ঘরে টার্গেট রাখবে, তবুও কিন্তু নাইটদের ম্যাচটা জিততে সমস্যা হবে না। সেটা গত ম্যাচে পুনের বিরুদ্ধে ইউসুফ পাঠানের বিধ্বংসী ব্যাটিং দেখে বোঝা গিয়েছে। ৯ ওভারে জয়ের জন্য কেকেআরের দরকার ছিল ৬৬ রান। কিন্তু ৫ ওভারেই তারা জয়ের কড়ি জোগাড় করে নিয়েছিল। ইউসুফের ফর্মে ফেরা যদি নাইট শিবিরকে স্বস্তি দেয়, তাহলে গৌতম গম্ভীর ও রবীন উথাপ্পা আচমকা অফ ফর্ম হয়ে যাওয়াটা অশনি সংকেত কেকেআরের কাছে।
বেঙ্গালুরু মূলত ব্যাটিং নির্ভর ক্রিকেট খেলছে। কেকেআর সাফল্য পাচ্ছে টিম গেমের জোরে। টপ অর্ডার ব্যার্থ হলেও তার প্রভাব সেভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না সাকিব-আল-হাসান, ইউসুফ পাঠান, মণীশ পাণ্ডে, আন্দ্রে রাসেল এবং সূর্যকুমার যাদবের প্রথাভাঙা পারফর‌্যান্সের কারণে। তবে রাসেলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ম্যাচের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা নিতে পারে। কেকেআরের ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলার মতো বেঙ্গালুরুর বোলার একজনই, তিনি যুজবেন্দ্র চাঁচল। ইডেনে তাঁর স্পিন খেলতে সমস্যা হবে নাইটদের। কোহলি হয়তো এই ম্যাচে আরও দুই স্পিনার পারভেজ রসুল ও ইকবাল আবদুল্লাকেও খেলানোর ঝুঁকি নিতে পারেন।

No comments:

Post a Comment

Comments